ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া নিউজে প্রকাশিত সংবাদ আদালতের নজরে

চকরিয়ায় সড়ক বিভাগের জমিতে অবৈধ মার্কেট প্রতিবেদন দিতে পিবিআই পুলিশকে আদালতের নির্দেশ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: চকরিয়া উপজেলার বরইতলী একতাবাজারে (গরুবাজার) ‘সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিতে অবৈধ মার্কেট নির্মাণে চলছে জমিদারি’ শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে এসেছে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের। এরই প্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রাজীব কুমার দেব স্বপ্রণোদিত হয়ে উল্লেখিত সরকারি জমি জবরদখল বিষয়ের আলোকে তদন্তপুর্বক আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেন (পিবিআই) কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালত সুত্রে জানা গেছে, ‘উপজেলার বরইতলী একতাবাজারে (গরুবাজার) সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিতে অবৈধ মার্কেট নির্মাণে চলছে জমিদারি’ শিরোনামে গত ৩ আগস্ট চকরিয়া থেকে প্রকাশিত ‘অনলাইন পত্রিকা চকরিয়া নিউজ’ (গণমাধ্যমে) সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের।

এরই প্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রাজীব কুমার দেব স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি মিচ মামলায় (নং ২৯/২১) উল্লেখিত সরকারি জমি জবরদখলের ঘটনার প্রেক্ষিতে সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত পুর্বক আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেন (পিবিআই) কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদেশের একপর্যায়ে বিজ্ঞ আদালত সরকারি এসব জমি দখলের ঘটনায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত ছিল কী না তাও তদন্তপুর্বক আদালতে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন।

সংবাদের পটভুমি :

সম্প্রতিসময়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া চকরিয়া উপজেলার বরইতলী একতাবাজার (গরুবাজার) এলাকায় ঘটেছে সড়ক বিভাগের অধিগ্রহনকৃত আরএস ৬৭০৯ খতিয়ানের বিএস ১৩২৯৭ দাগের জমি জবরদখলের ঘটনা।

অবশ্য ইতোমধ্যে এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোটি টাকা দামের জমি দখলে নিয়ে সেখানে আলিশান মার্কেটও গড়ে তুলেছেন জায়েদ নামের এক প্রভাবশালী। তিনি মার্কেটে নির্মিত একেক একটি দোকান চার থেকে ৬ লাখ টাকা সেলামী নিয়ে ভাড়াও দিয়েছেন। সওজের জমিতে নির্মিত মার্কেটে বনফুল নামের একটি অভিজাত খাবার দোকান থেকে ৬ লাখ টাকা সেলামী নিয়েছেন অবৈধ মার্কেট মালিক প্রভাবশালী জায়েদ। সরেজমিনে গেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশপাশের দোকানীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়ক বিভাগের অধিগ্রহনকৃত আরএস ৬৭০৯ খতিয়ানের বিএস ১৩২৯৭ দাগের জমিতে প্রভাবশালী জায়েদ একা নন, তার মতো আরও একাধিক ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে লম্বা লাইনে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। প্রায় এক যুগের বেশিসময় ধরে গরুবাজার জামে মসজিদ থেকে উত্তরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর পর্যন্ত এলাকায় অন্তত শতাধিক দোকান ও মার্কেট নির্মাণ করে জড়িতরা রীতিমত মালিক সেজে মাসিকহারে ভাড়াও উত্তোলন করছেন।

আশপাশ এলাকার পুরানো দখলবাজদের দেখাদেখিতে এবং করোনাকালীণ সময়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ব্যবস্থার সুযোগে ওই এলাকায় সর্বশেষ ঘটেছে নতুন করে জায়গা দখলের ঘটনা। ওইসময় জড়িতরা রাতের মধ্যে সড়কের জমিতে নতুন করে তিনটি দোকান তৈরী করে নিয়েছেন। এখনো চলছে অবশিষ্ঠ জমিতে দখলবাজদের অপতৎপরতা।

বরইতলী গরুবাজার নতুন করে সওজের জমি দখলের সত্যতা স্বীকার করেছেন কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের চকরিয়া উপ-বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী মো.দিদারুল ইসলাম। তিনি বলেন, খবরপেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থলে উচ্ছেদ অভিযান চালাই। ওইসময় দোকান নির্মাণের জন্য মজুদকৃত বেশকিছু মালামাল জব্দও করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের ঘটনায় জড়িত স্থানীয় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে গত ১৬ জুলাই চকরিয়া থানায় একটি এজাহার দিয়েছি। এজাহারের আলোকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মুহাম্মদ যোবায়ের আইনী পদক্ষেপ নিতে হারবাং পুলিশ ফাঁিড়র আইসিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এজাহারটি এখনো তদন্তাধীন আছে।

জানতে চাইলে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেন (পিবিআই) কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো.সরওয়ার আলম বলেন, আমি পারিবারিক কারণে ছুটিতে আছি। কয়েকদিন পর স্টেশনে ফিরবো। তারপর আদালতের নির্দেশা কপি প্রাপ্তি সাপেক্ষে এব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ##

 

পাঠকের মতামত: